বর্তমানে ফ্রীল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় কর্মক্ষেত্র। খুব সহজে এবং বিনা পুজিতে
আপনি ফ্রীল্যান্সিং শুরু করতে পারেন। আমাদের দেশে অনেক প্রতিভা আছে, আছে অনেক সম্ভাবনা শুধু দরকার তাদেরকে সঠিক
তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা। শুধু মাত্র সঠিক তথ্য এবং দিকনির্দেশনার অভাবে আমরা
পিছিয়ে যাচ্ছি। আমার এই লেখাতে আমি চেষ্টা করব, কিভাবে আপনি ফ্রীল্যান্সিং শুরু করবেন।
ফ্রীল্যান্সিং কি? সহজ কথায়
ফ্রীল্যান্সিং হল অন্য কার কাজ করে দেয়া। আমামদের দেশে ফ্রীল্যান্সিং বলতে আমরা
বুঝি অন্য দেশের কাজ একটা মার্কেটপ্লেস থেকে যোগাযোগ করে, কাজ নেয়া এবং সেটা করা।
ফ্রীল্যান্সিং এর
ক্ষেত্র - odesk. Elance, freelancer, আরও অনেক সাইট রয়েছে যেখানে আপনি বিনা মুল্লে নিবন্ধিত হতে পারেন এবং কাজ
শুরু করতে পারেন।
ফ্রীল্যান্সিং এর
সুবিধা- ফ্রীল্যান্সিং এর অনেক সুবিধা আছে,
যেমন আপনি নিজে নিজের কাজ
ঠিক করতে পারছেন, নিজের পছন্দ মত
কাজ বেছে নেয়ার সুযোগ, মার্কেট সম্পর্কে
ধারনা পাবেন, আন্তর্জাতিক
মানের কোম্পানির সাথে কাজ করার সুযোগ, নিজের পরিচয় এবং কাজকে অন্যকে জানাতে পারছেন, অবশ্যই আপনি উপার্জন করছেন, আপনার দক্ষতা যাচাই করার সুযোগ পাচ্ছেন,
সর্বোপরি এই বিশ্বায়নের
যুগে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারছেন।
কি কি ফ্রীল্যান্সিং করতে পারেন- অনেক ধরনের কাজ আছে, আপনি আপনার পছন্দ এবং যোগ্যতা অনুযায়ী যেকোনো
কাজ করতে পারেন। তবে আপনি যে কাজটি করবেন, তার একটি নুন্নতম মান থাকা ভাল বলে আমার মনে হয়। ওয়েব ডিজাইন, প্রোগ্রামিং, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইযেসান, লেখালেখি, ডিজাইন করা, অ্যাপলিকেসান ডেভেলপমেন্ট করা ইত্যাদি আপনাকে
ভিন্ন উচ্চতাই নিয়ে যেতে পারে। শুধু মাত্র টাকা উপার্জন করার জন্য ফ্রীল্যান্সিং
করা এবং নিজের অমূল্য সময় নষ্ট করা একই কথা। আপনাকে অবশ্যই এমন কাজ বেছে নেয়া
উচিত যেটা আপনার ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। আপনি এমন কাজ করেন, যেটা দিয়ে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারবেন,
গর্ব করতে পারবেন এবং
ভবিষ্যতে আপনার কাজে লাগবে।
ফ্রীল্যান্সিং এর জন্য চাই সঠিক দিকনির্দেশনা – সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে, আপনিও হতে পারেন একজন সফল ফ্রিলানসার।
এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হল, গতানুগতিক কোন
প্রথিষ্ঠান না গিয়ে, সফল
ফ্রিলানসারদের সহযোগিতা নেয়া, তাদের কাছ থেকে
সরাসরি হাতে কলমে শিক্ষা নেয়া, কেননা তারা কাজ
করেছে , তারা জানে কথাই
ভুল হয়, কোনটা করা ভাল আর
কোনটা করা ঠিক না।
নিজেকে ফ্রীল্যান্সিংএর জন্য তৈরি করুন- প্রথমে কোন কিছু না জেনে, ফ্রীল্যান্সিং শুরু করা ঠিক না। প্রথমে নিজেকে
তৈরি করুন এবং এরপর শুরু করুন। খুব ভাল হয়, আপনি যদি কোন একটা বা একাধিক কাজের উপর
প্রশিক্ষন নেন। যেমন ধরুন, ওয়েব ডিজাইন এর
কথা HTML, CSS দিয়ে আপনি কাজ
শুরু করতে পারেন এবং কাজ করতে করতে নিজেকে আর দক্ষ করে তুলতে পারেন। কাজ করার জন্য
সময় নির্বাচন, কমপিউটার এবং
অন্য সব কিছু ঠিক করে নিতে হবে এবং সর্বোপরি নিজেকে কাজ করার উপযোগী করে তুলতে হবে
এবং আমি আবার বলছি, এক্ষেত্রে
প্রশিক্ষন এর কোন বিকল্প নেই। আপনার নিজের কিছু কাজের নমুনা, (Portfolio), কোন নিজস্ব ব্লগ, ফোরাম আপনাকে অন্নদের থেকে এগিয়ে রাখবে,
এর যদি আপনার নিজস্ব
ওয়েব পেইজ থাকে তাহলে অনেক ভাল হয়।
যারা নতুন ওডেস্কে যোগ দিয়েছেন তাদের জন্য শুভ কামনা। নতুন হিসাবে আপনাকে কিছু
গুরুত্বপূর্ন বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। সেই বিষয় গুলো নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা
করলাম।
আপনি প্রথমেই কাজ পেতে থাকবেন না। কাজ পাওয়ার আগে নিজেকে কাজ পাওয়ার যোগ্য
হিসেবে তুলে ধরতে হবে। প্রথমে আপনি আপনার প্রোফাইলটাকে সুন্দর ভাবে সাজাবেন।
পোর্টফোলিয়ো আইটেম, স্কিল, ওভারভিউ – যেন অসম্পূর্ণ না থাকে সেই দিকে নজর দিন। কাজে
বিড করার আগে অবষ্যই এইগুলো ঠিক ঠাক করে নিবেন।
আপনি আগে কোন কাজ করেন নাই/ কোন বিশেষ কাজ নেই যা পোর্টফোলিও তে দেয়া যায় –
এই ক্ষেত্রে নিজের তাগিদে
কিছু কাজ করুন এবং সেইগুলো পোর্টফোলিওতে দেখান।
ওডেস্কের রেডিনেস টেস্ট দিন সাথে আপনার কাজ সংশ্লিষ্ট টেস্ট গুলো দিন। স্কোর
ভালো হচ্ছে না? – কষ্ট করে একটু
টেস্ট গুলোর পিছনে সময় দিন, কিছুটা শ্রম দিলে
অবষ্যই পারবেন। আহামরি কোন কঠিন প্রশ্ন টেস্টে দেয়া হয়না।
নতুন অবস্থায় Hourly Rate টা কম রাখুন। ২
ডলার প্রতি ঘন্টা থেকে শুরু করতে পারেন। কত কম ধরবেন সেটা আপনার ইচ্ছা তবে খুবই কম
দেওয়া ভালো না।
বিড করার সময় খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত কম অথবা বেশি বিড যাতে না করেন। অতিরিক্ত
কম বিড করলে অনেকেই ভাববে আপনি যোগ্য না তাই কম বিড করছেন। অন্যদিকে অতিরিক্ত বেশি
বিড করলে আপনি কাজ নাও পেতে পারেন। এই ক্ষেত্রে আপনাকে একটু যাচাই বাছাই করতে হবে।
যেমন ধরুন সেই এমপ্লয়ার আগে যেই জব পোস্ট গুলো করেছিলো সে গুলোতে কেমন খরচ করেছিলো,
দুই একটা জব পোস্টে গিয়ে
দেখুন কোন কাজে কোন রেঞ্জ এর রেট এ সে ইন্টারভিও করছে। এইভাবে কিছুটা ধারনা নেয়ার
চেষ্টা করুন। আর নতুন এমপ্লয়ার হলে আপনার সুবিধা মত বিড করুন যেই রেটে করলে আপনার
ভালো হয়।
কভার লেটার লেখার ক্ষেত্রে কপি পেস্ট পন্থা প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন। কখনোই
একটা জিনিস সব কভার লেটারে লিখবেন না। জব পোস্টটা ভালো করে পড়বেন। অনেক সময়
এমপ্লয়ার জব ডেস্ক্রিপশনে কিওয়ার্ড দিয়ে দেন যা দ্বারা তিনি পরবর্তিতে বুঝতে পারেন
আপনি তার লেখা গুলো পড়েছেন কি না। তাই পুরো লেখাটা পড়বেন এবং সেই আলোকে আপনার কভার
লেটার লিখবেন। অবষ্যই আপনার করা ভালো ভালো
কাজের স্যাম্পল এর লিংক দিবেন যাতে বুঝাতে পারেন আপনি কাজটির জন্য উপযোগি- দিতে বলুক
আর না বলুক।
এমপ্লয়ার জবাব দিলে/ ইন্টারভিউ নিতে চাইলে দ্রুত সাড়া দেবার চেষ্টা করবেন।
কাজের Sample চাইলে এমন ভাবে
দিবেন যাতে সেটা নিয়ে ব্যবহার করতে না পারে অর্থাৎ পেমেন্ট পাবার আগে কোন
গুরুত্বপূর্ন ফাইল হস্তান্তর করবেন না।
Fixed Job এ আগেই পুরো কাজ হস্তান্তর করবেন না। পেমেন্ট
হওয়ার পর দিবেন। আগে Sample দিবেন (এমন ভাবে
যাতে সে তা ব্যাবহার করতে না পারে) আর Hourly job এর ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই, oDesk Team
ব্যাবহার করে Time
track করবেন নিশ্চিত পেমেন্ট
পাবেন। যে সকল কাজ Sample আকারে দেয়া সম্ভব
না সেই গুলোর জন্য এমপ্লয়ারের সাথে আলোচনা করে Hourly Job এ করে নেয়ার চেষ্টা করবেন। আর এমপ্লয়ার পরিচিত
ও বিশ্বস্ত হলে এই পয়েন্ট নিয়ে চিন্তা না করলেও চলবে। তবে হ্যা, অনেকে আছে আপনার সাথে প্রথমে ভাল এমপ্লয়ার সেজে
ত্থাকবে পরে বড় কাজ করিয়ে নিয়ে নিরুদ্দেশ হবে। তাই সাবধান থাকাটাই ভালো।
পেমেন্ট করার পর
সেইটা আপনি সাথে সাথে পাবেন না। সেই জন্য এই ব্যাপারে আবার এমপ্লয়ারকে দোষ দিয়ে
বসবেন না :-D Hourly job এর জন্য এই লিংক
দেখুন https://kb.odesk.com/questions/905/What+is+the+weekly+pay+schedule%3F
আর Fixed
price jobs এর ক্ষেত্রে পেইমেন্ট
প্রসেস করতে টাইম নেয়। সেই টাইমের পর পেমেন্ট পেন্ডিং আর দেখাবে না সেই যায়গায়
একটা Date দিয়ে দিবে যেই Date
এ ডলার আপনার একাউন্টে
ব্যালেন্স হবে।
আশা করি আপনাদের
সবার কাজে আসবে। নতুন কিছু মাথায় আসলে, যোগ করবো। আরো বিস্তারিত জানতে https://kb.odesk.com/ লিঙ্কে যাবেন।
এখানে অনেক প্রশ্নের জবাব পাবেন। তাছাড়া oDesk এ লাইভ চ্যাটের ব্যাবস্থা আছে, সেখানেও আপনার জিজ্ঞাসা তুলে ধরতে পারেন।
গ্রুপে নিয়মিত হোন, আপনারও উপকার হবে,
অন্যকেও উপকার করে ভাল
লাগবে :)
গ্রুপে প্রতিদিন
অনেক প্রশ্ন করা হয় এবং সেগুলোর উত্তর দেয়া হয়। আমার অনুরোধ থাকবে প্রশ্ন করার আগে
এই ভিডিওতে বর্নিত বিষয় গুলো খেয়াল করবেন।